নিউজ ডেস্কঃ আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন শপথ নিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন জো বাইডেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জন রবার্ট তাকে শপথ-বাক্য পাঠ করিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে যাত্রা শুরু করলেন জো বাইডেন। নানা অঘটন ঘটিয়ে মঞ্চ থেকে বিদায় নিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প।
করোনাভাইরাস মহামারীকালে ওয়াশিংটন ডিসিতে নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্যে বুধবার বাইবেলে হাত রেখে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন বাইডেন।
সমসাময়িককালে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে কঠিন সঙ্কটকালে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বয়সী রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিলেন এই ডেমোক্র্যাট নেতা।
তার সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়ে নতুন ইতিহাস গড়লেন কমলা হ্যারিস। যিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট; দেশটির প্রথম কালো এবং প্রথম এশীয় বংশোদ্ভূত ভাইস প্রেসিডেন্টও তিনি।

ক্যাপিটল ভবন প্রাঙ্গণে লেডি গাগার পরিবেশনায় জাতীয় সঙ্গীতের পর শপথের মঞ্চে আসেন কমলা হ্যারিস; তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বিচারক সোনিয়া সোটোমেয়ার।এরপর জেনিফার লোপেজের গানের পর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ; শপথ নিতে দাঁড়ান বাইডেন। তাকে শপথ পড়ান যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস। শপথ নেওয়ার সময় যে বাইবেলে হাত ছিল বাইডেনের তা তার পরিবারের এবং ১২৭ বছরের পুরোনো।
শপথ নেওয়ার পর অভিষেক ভাষণে ঝঞ্ঝামুখর সময় পেরিয়ে আশার বাণী শোনান নতুন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
তিনি বলেন, “আজ আমেরিকার দিন, গণতন্ত্রের দিন, ইতিহাস গড়া আর প্রত্যাশার দিন, নবসূচনা আর ক্ষত নিরাময়ের দিন।”
ট্রাম্প জমানায় গড়ে ওঠা বিভেদের প্রাচীর ভেঙে ঐক্যের ডাকও দিয়েছেন বাইডেন।
সামনে এগিয়ে যেতে সবাইকে পাশেও চেয়ে বলেছেন, “আমরা আমেরিকার নতুন ইতিহাস রচনা করব। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, সব সময় আপনাদের পাশে থাকব।
“আমরা অনেক দূর এগিয়েছে। আরও এগোতে চাই। আমরা এক হলে আরও ভালো কাজ করতে পারি। আমাদের অনেক ক্ষত মেরামতের প্রয়োজন আছে। অনেক কিছু গড়ার আছে।”
পাশে থাকা নতুন ফার্স্টলেডি জিল বাইডেনের উদ্দেশে বাইডেন বলেন, “আমার এই সফরে তোমার সঙ্গ পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে আসা পঞ্চদশ ভাইস প্রেসিডেন্ট হলেন বাইডেন।
যার সঙ্গে বাইডেন ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলেছিলেন, সেই বারাক ওবামাও ছিলেন অভিষেক অনুষ্ঠানে।
বিবিসি জানিয়েছে, অনুষ্ঠানে সাবেক প্রেসিডেন্টদের বিল ক্লিনটন উপস্থিত ছিলেন তার স্ত্রী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে নিয়ে। অংশ নেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশও।
বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দেড়শ বছরের মধ্যে এই প্রথম বিদায়ী প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতিতেই হল নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক।
নির্বাচনের ফল মানতে নারাজ ট্রাম্প আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানে যাবেন না।
বাইডেন যখন হোয়াইট হাউজের নতুন বাসিন্দা হতে শপথের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, ট্রাম্প তখন হোয়াইট হাউজ ছেড়ে ছিলেন মেরিল্যান্ডে অ্যান্ড্রুস বিমান ঘাঁটিতে।
সেখানেই তিনি তার বিদায়ী আয়োজন সারেন। সংক্ষিপ্ত এক ভাষণে তিনি নতুন প্রশাসনের সাফল্য কামনা করলেও একবারের জন্য বাইডনের নাম নেননি।
‘আমরা আবার ফিরে আসব’- বলে সেই ভাষণ শেষ করে স্ত্রীকে নিয়ে ফ্লোরিডার পাম বিচে রওনা হন ট্রাম্প।